নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ০২ মার্চ ২০২৪ | প্রিন্ট | 181 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
জেনেটিক টেস্টিং এ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চান যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি ড.মোহাম্মদ আরিফ। তার মতে বাংলাদেশে লাখ লাখ পরিবারে বিকলাঙ্গ ও অটিস্টিক শিশু নিয়ে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলো স্বামী বা স্ত্রীকে দোষারোপ করে সংসার ভাঙ্গার দিকে এগিয়ে যায়। উন্নত বিশ্বে এ সব শিশুদের উন্নত সেবা ও বিশেষায়িত স্কুলে পাঠিয়ে তাদের সুস্থ কওে তোলা হয়। বাংলাদেেিশ এ ব্যাপারে আমরা পিছিয়ে আছি। তিনি সেবার প্রত্যয় নিয়ে জেনেটিক টেস্টিং ব্যবস্থার আমূল পরিবর্ত ঘটিয়ে বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান।
ড. আরিফ নর্থশোর ইউনিভারসিটি হসপিটালে ডাইরেক্টর হিসেবে কর্মরত আছেন। হফস্ট্রা ইউনিভারসিটির এসিসট্যান্ট প্রফেসর হিসেবে কাজ করছেন জুকার স্কুল অব মেডিসিন ডিপার্টমেন্টে। সাপ্তাহিক আজকাল পত্রিকায় দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, নিজ পারিবারিক জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে জেনেটিক বিজ্ঞানে কাজ করার শপথ নিয়েছি। ২০১১ সালে আমার ছোট মেয়ে জন্ম নেয়। জেনেটিক স্ক্রিনিং টেস্টে তার একটি রোগ ধরা পড়ে। তা নিয়ে আমরা শংকিত হয়ে পড়ি এমন পরিস্থিতিেিত একটা পরিবারে মানসিক কি দশা হয় তা ভুক্তভোগীরাই বুঝবেন। বাংলাদেশে এ ধরনের স্ক্রিনিং বা উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। এরপর থেকেই আমার স্টাডি ও পেশার ক্ষেত্র হিসেবে জেনেটিক্যাল সায়েন্সকে বেছে নেই।
ড. আরিফ তার পেশার উৎকর্ষতাকে বাংলাদেশের সাধারন মানুষের জন্য কাজে লাগাতে চান। আমেরিকায় ভালো বেতনে কাজ করলেও তার মন পড়ে আছে মাতৃভূমিতে। তিনি আজকালকে বলেন,মায়ের পেটের বাচ্চাটি সুস্থ হবে কিনা তা নির্ধারন করতে পারে জেনিটিক্যাল সায়েন্স। বাচ্চাটি বিকলাঙ্গ বা অটিস্টিক হবে কিনা তা অনেক আগেই নির্ধারন করা সম্ভব। রোগটি কোন পর্যায়ে আছে তা ঠিক করাই বড় চ্যালেঞ্জ। চিকিৎসক ও পরিবারের আলোচনায় করণীয়টাই তখন মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। আর এই সেক্টরে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। আমি সরকারি কিংবা বেসরকারি উদ্যোগে তা নিয়ে কাজ করতে চাই। জ্বনাব আরিফ দুঃখ করে বলেন,,এ নিয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন সেক্টরে আলোচনা করেছি। কিন্তু কোন আশাপ্রদ সাড়া পাইনি। তাদের ধারণা, প্রস্তাবিত প্রোজেক্টকে সামনে রেখে আমি হয়তো মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নেবার চেষ্টা করছি। সন্দেহের বাতিকটা আমাদের মতো লোকদের বারবার হতাশ করে। তিনি বলেন, ‘মলিকুলার জেনিটিক টেস্টিং’ বাংলাদেশে প্রসাঢ় ঘটাতে হবে। এর ওপর প্রশিক্ষন দিয়ে তৈরি করতে হবে পেশাদার টেকনোলজিস্ট। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি মেডিক্যাল স্কুলগুলোতে সার্টিফিকেট কোর্স চালু করতে হবে। সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত এই টেকনোলজিস্টদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে মিডলইস্টসহ উন্নত বিশ্বে। তাদের বিদেশে পাঠিয়ে বাংলাদেশ মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারে।
ড. মোহাম্মদ আরিফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োকেমেস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজিতে মাস্টার্স করেছেন। ২০০১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ২০০৬ সালে জাপান থেকে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। ২০১০ সালে তিনি যুক্তরাষ্টে আসেন। প্রথমে মাউন্ট সিনাই হসপিটালে রিসার্সফেলো হিসেবে কাজ শুরু করলেও পরে হাসপাতাল কর্তপক্ষ তার শিক্ষা ও মেধার আলোকে জেনেটিক সায়েন্সের উপর স্টাডি করার সুযোগ দেন। ২০২২ সালে যোগ দেন নর্থশোর হাসপাতালে। বর্তমানে তিনি জেনিটিক্যাল ডিপার্টমেন্টের পরিচালক। তার অধীনে ২ জন বাংলাদেশিসহ ১৭ জন স্টাফ কাজ করছেন।
Posted ৮:০৪ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০২ মার্চ ২০২৪
nykagoj.com | Monwarul Islam